জাহিদুল ইসলাম :- জীবন ছিলো করুন ইতিহাসে ভরপুর লামিয়ার, পিতাঃকাদের হাওলাদার, মাতা রাবেয়া বেগমের অভাবের সংসারে অল্প বয়সেই বিয়ে হয় তার। বাদল হাওলাদারের সাথে পরিবারিক সন্মতিতে (২০১২সালে) বিবাহ হয়। বিবাহের পর স্বামীর নিজ বাড়ি তুলিয়া নিয়ে স্বামী -স্ত্রী হিসেবে দাম্পত্য “জীবন যাপন করে। বিবাহের সময় পিতা- মাতা অনেক কষ্টে এলাকার গন্যমান্য লোকের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে বিবাহ দেন।বিবাহের সময় বাবা-মা তাকে স্বর্নের চেইন, কানের দুল, স্বর্নের আংন্টি ও বরের জন্য পোষাক ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে। সাথে হাড়ি,পাতিল, বিছানাপত্র দেওয়া হয়,।এর পর থেকে প্রায় ৩ বছর তার সংসার করে। তার পর থেকে তার যৌতুক লোভী স্বামী তার বাবার বাড়িতে থেকে ( এক লক্ষ) টাকা আনার জন্য পাঠাইয়া দেয়। বাবার বাড়িতে চলে আসার পর বাবার কাছে সব খুলে বলে।বাবার আর্থিক অবস্থা একদম ভালো না।এক কথায় বলা যায় তার বাবার পরিবার ঠিকমত তিনবেলা ভাত খেতে পারেনা। স্বচক্ষে দেখে তার পর বিষয় টি তার স্বামীর কাছে খুলে বলে। এরপর থেকে স্বামী আর শ্বশুর – শ্বাশুড়ি তাকে গালা-গালি , ও বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানষিক অত্যাচার সহ ঠিক মত ভাত খেতেও দিতোনা। এছাড়াও রাতের বেলা তাকে মেরে বাসা থেকে বের করে দিতো। সমস্ত অত্যাচার মুখ বুজে সহয় করে যেতো কারন তার বাবার ( একলক্ষ) টাকা দেবার মতো সাধ্য নাই, এর মধ্যে আল্লাহর হুকুমে তার গর্বে সন্তান আসে।সে কথা তার স্বামীকে জানানোর পর বর্বর স্বামী তার উপর আরো কঠোর হয় এবং আগের থেকেও বেশি নির্যাতন করে। একথা শ্বশুর শ্বাশুড়িকে জানানোর পরে তারা কোনো প্রতিবাদ না করে তার ছেলের জন্য বাবার থেকে (একলক্ষ) টাকা এনে দিতে বলে। স্বামীর বাড়িতে এভাবে প্রতি নিয়ত নির্যাতন চলতে ছিলো ঠিক মতো খাবার দিতোনা,পরার জন্য পোষাক দিতোনা, এক কাপড়ে রাখতো, রাতের বেলা মেরে মাথা ফাটিয়ে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার মতোও ঘটনা ঘটছে। আবার স্বামী তার সামনেই অন্য মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করত। কিন্তু শ্বশুর শ্বাশুড়ি তার ছেলেকে কিছু বলতোনা, এভাবে তার উপর অত্যাচার চলতো। তাও মানিয়ে নিতে চেষ্টা করে। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি স্বামী তাকে তাদের বাড়ি থেকে এক কাপড়ে তারিয়ে দেয়। অবশেষে বাবার বাড়িতে চলে আসে।কিছু দিন পর বাবার বাড়িতে থেকে কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এরপর বাবার কষ্টের সংসারে কিছু মাস থাকার পরে যখন দেখে বাবার সংসার চালাতেই কষ্ট হয়।তার মেয়কে ভালো খাবার খাওয়াতে পারতো না। ভালো পোষাক দিতে পারতামনা। তখন থেকে শুরু বিভীসিকাময় মূহুর্ত থেকে বাঁচার লড়াই এর পর বাচ্চাকে নানীর বাড়িতে রেখে মানুষের বাড়িতে কাজ শুরু করে।এক পর্যায়ে অভারের কথা এলাকার মেম্বারের কাছে বলার পর তিনি তার বাসায় কাজ করার সুযোগ দেয়।এভাবেই কেটে গেলো জীবনের ৪ বছর। এর পর বাকেরগঞ্জ উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অফিস থেকে সেলাই কাজে প্রশিক্ষন নিয়ে মেশিন কনে সেলাই কাজ শুরু করে। এর পাশাপাশি মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করে, দরর্জির কাজ করে তার ও মেয়ের যাবতীয় খরচ মেটাতে থাকে। বর্তমানে মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে অধ্যায়নরত। এলাকায় দর্জির কাজ ও কসমেটিকসের দোকান দিয়ে। বর্তমান মাসিক আয় ৫/৭ হাজার টাকা আয়। আয়ের টাকায় অনেক গুলো হাঁস মুরগী কিনছে। বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। তিনি বলেন আমি এখন জীবন যুদ্ধে নিজেকে জয়ী মনে করি। জয়িতা নারী পুরস্কার পেয়ে তিনি খুশি। তার পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। ভবিষ্যতে তিনি আরও অনেক দুরে এগিয়ে যেতে চান এজন্য তিনি সকলের দোয়া ও আশির্বাদ কামনা করছেন।