
নিজস্ব সংবাদদাতা বাকেরগঞ্জ বরিশাল
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এক হিন্দু পরিবারের পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখল করে বাউন্ডারি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ওই সংখ্যালঘু পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যে একটি চাঁদা দাবির মামলা করে তাদেরকে বাড়িঘর ছাড়া করা হয়েছে। বর্তমানে ওই সংখ্যালঘু পরিবারের লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিঠুন চন্দ্র সাহার বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
সরেজমিনে গেলে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় লুৎফর খান ও মিঠুন চন্দ্র সাহার বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জেরে গত বছর ২০২৪ সালের মার্চ মাসে লুৎফর খান ও তার ভাগিনা মাহামুদ তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৩০-৪০ জন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দিয়ে মিঠুন চন্দ্র সাহার জমির গাছ কেটে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেন। ওই ঘটনায় মিঠুন চন্দ্র সাহা বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লুৎফর খানের বিরুদ্ধে ১৪৪/১৪৫ ধরায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত সম্প্রতি সময়ে মিঠুন চন্দ্র সাহার পক্ষে রায় দিলে তারা তাদের সম্পত্তি ভোগ দখলে যাওয়ার চেষ্টা চালালে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে একটি চাঁদা দাবীর অভিযোগ তুলে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন লুৎফর খান। ওই মামলার সংখ্যালঘু পরিবারের সবাই পালিয়ে থাকার সুযোগে লুৎফর খান নতুন করে স্থায়ী বাউন্ডারি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মিঠুন চন্দ্র সাহা বলেন, আমাদের ভিটামাটি অবৈধ ভাবে দখল করে নিয়ে লুৎফর খান তাদের লোকজন দিয়ে গতবছর একটি বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছিল। তখন আমরা আদালত একটি মামলা করি। ওই মামলায় আমাদের পক্ষে রায় আসলে লুৎফর খান এখন নুতুন করে কলম দিয়ে স্থায়ী বাউন্ডারি নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টি আমরা বারবার পুলিশকে জানালেও পুলিশ কার্যকারী কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা চাঁদা দাবির মামলা দিয়ে আমাদেরকে বাড়ি ঘর ছাড়া করা হয়েছে। আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এদেশের নাগরিক না, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে আমাদের উপর হামলা করেছে যাহারা মামলা বর্তমানে চলমান রয়েছে।
গত বছর ২৪শে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পালিয়ে গেছে, দেশ পরিবর্তন হয়েছে, ধারনা করেছি এখন স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারবো। কিন্তু আদালতের রায় পাওয়া সত্বেও আমার বা-দাদার সম্পত্তিতে যেতে পারছি না। তাহলে কি দেশ থেকে চলে যেতে হবে, আমরা কি এদেশে থাকতে পারবোনা। আমারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেটা পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করলে এরকম কোনো ঘটনার সত্যতা পাবে না। আমি এবিষয়ে
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
লুৎফর খান বলেন, আমি ক্রয়সূত্রে এই জমির মালিক। মিঠুন চন্দ্র সাহারা এই জমির মালিক দাবি করলেও তারা এখানে জমি পাবে না। তাদের জমি অন্য দাগে রয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: আবুল কালাম আজাদ বলেন, এডিএম কোর্টের একটি আদেশ আমরা পেয়েছি। উভয় পক্ষকে বলা হয়েছে বিরোধী সম্পত্তিতে কোন স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য। যদি কেউ কোর্টের আদেশ অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।