জাহিদুল ইসলাম :- ২০০১ সালে বাবার লিভারের অসুখ ধরা পরার কারনে পড়াশোনার খরচ চালানো বাবার জন্য কঠিন হয়ে যায়। দারিদ্রতার কাছে মাথা নত না করে ভেঙে না পরে নিজেকে সাবলম্বী করার দৃঢ় মনবল নিয়ে এগিয়ে যান। তখন জয়শ্রী চক্রবর্তী বয়স যখন ১৮ তিনি একাদ্বশ শ্রনীর ছাত্রী। দারিদ্রতার কাছে মাথা নত না করে ভেঙে না পরে নিজেকে সাবলম্বী করার দৃঢ় মনবল নিয়ে এগিয়ে যান। কিভাবে কি করবেন ভেবে চিন্তে স্থির করতে পারছেননা। বড় মেয়ে হিসেবে এক দিকে পরিবারের হাল ধরা অন্যদিকে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছে, ভেবেচিন্তে নিজেকে টিউশনিতে নিয়োজিত করেন। একাদ্বশ শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় প্রতিবেশীদের সহায়তায় পঞ্চম শ্রেনীর একটি মেয়ের টিউশনি সংগ্রহ করেন তিনি, মাত্র ৫০০ টাকা মাইনে, তাই দিয়ে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া, এবং সেই সাথে ৩য় শ্রেনীতে পড়া ভাইয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া দায়িত্বভার তার মাথার উপরে, টিউশনিতে ভালো পারদর্শিতার কারনে মাত্র ৬ মাসের মধ্যে আরও ৩ টি টিউশনি পেয়ে যান তিনি, সব মিলিয়ে মাসে ১৫০০ টাকা আয়ের একটা ব্যাবস্থা হয় তার। কিন্তু এভাবে কতোদুর সম্ভব? তবুও সমাজের মানুষের নানান উস্কানিমূলক বক্তব্য কে,অগ্রাহ্য, করে এগিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছে তার।কারো কাছে হাত না পেতে মাথা নত না করে,অদম্য ইচ্ছে শক্তির বলে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি১৯৯৯ সালে মাধ্যমিক স্তরে ১ ম বিভাগ পেয়ে সফলতার সাথে উত্তির্ন হন,২০০১ সালে এইচএসসি পরীক্ষার মানবিক বিভাগ থেকে ১ম বিভাগে তিনি উত্তির্ন হন।২০০৫ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনস্ত ইংরেজি বিভাগ থেকে ২য় বিভাগ পেয়ে কৃতিত্বের সহিত, বি,এ( অনার্স) এবং ২০০৬সালে এম,এ( ইংরেজি) ২য় বিভাগ পেয়ে উত্তির্ন হয়।কঠোর পরিশ্রমী,অদম্য আত্মবিশ্বাসী , তীক্ষ্ণ মেধাবীনী জয়শ্রী চক্রবত্তীর ২০০৫ সালে বিয়ে হয়ে যায়। ২০০৬ সালে, এম,এ সম্পুর্ণ করার পরে কিন্ডার গার্ডেন ইস্কুলে চাকরি নেন, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে বেসরকারি এমপিও ভুক্ত ইস্কুলে চাকরি গ্রহন করেন, কাজের প্রতি কঠোর মনোনিবেশ অবিচল আস্থা, সততা ও দূরদর্শিতা অতি দ্রুত তাকে পৌঁছে দেয় সাফল্যের শীর্ষে।অদম্য আত্নবিশ্বাস,প্রবল ইচ্ছে শক্তি, সামাজিক নানা প্রতিকূলতা এবং চরম দারিদ্রতাকে জয় করে শিক্ষা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করছেন তিনি,এবং তার দূরদর্শিতা চাকরি ক্ষেত্রে তাকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যে অর্জন কারী নারী ক্যাটাগরিতে, মাষ্টার ট্রেইনার হিসেবে সফলতার সাথে, ২০২১ সাল থেকে সেশন পরিচালনা করে আসে।২০২৩ সালে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেনী শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। বিদ্যালয়ের ভিবিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন,বিদ্যালয়ের ইভটিজিং রোধে কমিটি তৈরি করে মেয়েদের বিদ্যালয়ে আসার পরিবেশ তৈরি করেন।সামাজিক নানা কুসংস্কার নানান প্রতীকূলতা ভেদ করে অদম্য আত্নবিশ্বাসে প্রবল ইচ্ছে শক্তি নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। পারিবারিক পশাৎপদতা তাকে পিছু হটাতে পারেনি।মায়ের চিকিৎসা ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ নিজের পড়াশোনার খরচ পরিবারের ভরন-পোষন সব কিছু তাকেই চালিয়ে নিতে হয়েছে।এতে পশাৎপদতার পরের উচ্চ শিক্ষা থেকে বিচ্যুত নন তিনি, বর্তমানে এম এড.অধ্যায়নরত। জয়শ্রী চক্রবর্তী প্রত্যন্ত গ্রামঅঞ্চল বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার ব্যাপারে নারীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, বিনামূল্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন সম্পন্ন করার কাজে সবাই কে সহায়তা করেন। তার এসব মানবিক গুনাবলি পরিশ্রম ও কর্মক্ষেত্রে নিষ্ট ও সততার কারণে তাকে চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে জয়িতা নারী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করছেন কতৃপক্ষ,