| ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি November 14, 2025, 2:00 pm
Title :
সাংবাদিককে প্রাননাশের হুমকি, আদালতে আশা চৌধুরী সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা পূবাইলে বার্ষিক পরীক্ষার সময় বাউলগান নিয়ে তীব্র সমালোচনা ” বাকেরগঞ্জের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।” — আবুল হোসেন খান দিপু ভূইয়াকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবো- যুবদল নেতা সাখাওয়াত বরিশালে জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত! সংবাদ প্রতিদিনের বার্তা সম্পাদক হলেন প্রতিবাদী সাংবাদিক খান মেহেদী! গর্বের বাকেরগঞ্জের ৬টি ইউনিয়ন শাখায় নতুন কমিটি ঘোষণা বাকেরগঞ্জে যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদল নেতা রায়হানের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল! বাকেরগঞ্জে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পৌর যুবদলের র‍্যালি ও আলোচনা সভা জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা কলেজে বই ও বাইসাইকেল বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত! 

৫ আগস্টের পর নতুন মোড়কে এসে হয়রানি, সেনাবাহিনীর কাছে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, নভেম্বর ৩, ২০২৪
  • 219 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসলেও বরিশালের দক্ষিণ রুপাতলী এলাকার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মন্নান খান বাদশার স্ত্রীকে হয়রানি করা বন্ধ হচ্ছে না।

বরং বিগত সময়ে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই পরিবারটির পৈত্রিক ভূমি নিয়ে হয়রানি করা হলেও ৫ আগস্টের পরেও অনুরুপ হয়রানি করে চলছে পড়শি স্থানীয় গুটিকয়েক ব্যক্তি, যাদের একখণ্ড ভূসম্পত্তি রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার বাসার পেছনে।

জনৈক সালাম কশাই নামের ব্যক্তির ভূমিটি বাড়তি লাভে বিক্রির উদ্দেশে স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাসার অভ্যন্তর থেকে রাস্তা বের করতে চাইছেন, যা আইনসিক্ত নয়। এনিয়ে অতীতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আব্দুল্লাহ আল নাঈম রয়েলকে বিএনপি উল্লেখ করে খুন-ঘুমের হুমকি-ধামকি এবং থানা পুলিশ-সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে একাধিকবার হয়রানি করা হয়।

এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক চাপের মধ্যে রাখাও হয়েছিল। তখন নিজেদের আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থক দাবি করে এমনটি করা হলেও ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হলেও এখন তারাই বিএনপি কর্মী-সমর্থক পরিচয়ে ফের হয়রানি শুরু করেছেন। অথচ পুরো বিষয়টি মীমাংসিত, তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে দলিল দস্তাবেজ পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন। উভয়পক্ষকে ডেকে নিয়ে তৎকালীন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সাউথ) মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অহেতুক হয়রানি বন্ধ করতে বারণ করেছিলেন।

এরপরে কয়েক মাস হয়রানি বন্ধ থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে সেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই নিজেদের বিএনপি পরিচয় দিয়ে হয়রানি করতে শুরু করেছে, যা আসলেই উদ্বেগের। ভূমি মালিক সালামদের এই হুমকি-ধামকিতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ফাতেমা বেগম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছেন, কারণ তার ছেলের ক্ষতি করতে চক্রটি উঠেপড়ে লেগেছে। ষাটোর্ধ্ব ফাতেমা বেগম অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ করে প্রতিকার চেয়েছেন।

ফাতেমা বেগম জানান, বাড়ির পেছনের অংশে অর্থাৎ তার স্বামীসহ স্বজনদের ভূমির সীমানাপ্রাচীর সংলগ্ন বাংলাবাজার এলাকার সালাম কশাইয়ের ক্রয় করা ৮২ শতাংশ জমি আছে। সেই জমিতে যাতায়াতে পূর্বপাশ থেকে দুটি রাস্তাও রয়েছে, কিন্তু জমিটি অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করতে তিনি কৌশল নিয়েছেন। প্রথমে অর্থের বিনিময়ে আমাদের বাসার ওপর দিয়ে রাস্তা নিতে চাইছিলেন, এতে আমরা অসম্মতি জানানোয় শুরু করে হয়রানির পেক্ষাপট। বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে তারা নিজেদের ওই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে ছেলে রয়েলকে খুন-গুমের হুমকি-ধামকি দিলেও পরবর্তীতে পুলিশ-সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে মানসিক হয়রানি শুরু করে।

কিন্তু সবখানেই তারা সঠিক কাগজপত্র পদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে, পরে তারা বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেও আমার ছেলে রয়েলকে বিএনপি উপাধী দিয়ে সুবিধা নিতে চেয়েছিল। কিন্তু কাগজপত্র না থাকায় এতেও তারা ব্যর্থ হয়। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন নিজে ভূমিকা রেখে দলিলপত্র পরীক্ষা করে সালাম কশাইদের নির্দেশ দেন, আর যেনো হয়রানি না করা হয়।

এই মীমাংসিত বিষয়টি নিয়ে ৫ আগস্টের পর ফের নতুন করে হয়রানি শুরু করছে সালাম বাহিনী। পুলিশ কমিশনার অফিসে নতুন একটি অভিযোগ করাসহ নিজেদের বিএনপি নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে হয়রানি এবং সালাম কশাইয়ে মেয়ে জামাতা আসাদুজ্জামান নয়ন বিএনপির শীর্ষনেতার সাথে থাকেন সম্পর্ক রাখেন, এও বলে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রয়েল বলেন, সালাম কশাই তার কম মূল্যের ভূমি বেশি দামে বিক্রি করতে চাইছেন। প্রথমে রাস্তার জন্য আর্থিক প্রস্তাব দিলেও পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন, পুলিশ-সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ করে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসন কাগজপত্র দেখে তাদের হয়রানি না করতে বলেছে। তারপর তারা সংবাদ সংম্মেলন করে আমাকে বিএনপি এবং আমি বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন সিকদারের স্বজন আখ্যায়িত করে সুবিধা নিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারাই ৫ আগস্টের পর এখন নিজেদের বিএনপি পরিচয় দিচ্ছে এবং আমাকে মস্তবড় আওয়ামী লীগ বানাচ্ছে। অথচ আমি একজন ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও কোনো রাজনৈতিক দল করি না, জানান রয়েল।

মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ফাতেমা বেগম অভিযোগ, এই গ্রুপটি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে ৫ আগস্টের আগে নিজেদের ঘরে আগুনের লাগানোর অভিযোগে পুলিশের কাছে গেছিল। পুলিশ অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তখন তাদের নালিশটি পরবর্তীতে আর আমলে রাখেনি। এরপরেই ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে সেই আওয়ামী লীগ পরিচয়দানকারীরা এখন নতুন মোড়কে বেরিয়ে আসতে চাইছে, যা দেখে স্থানীয়রা হতবাক-বাকরুদ্ধ। গোটা সালাম কশাই গ্রুপ নিজেদের বিএনপি অনুসারী দাবি করছে এবং তার জামাতা আসাদুজ্জামান নয়ন লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে থাকেন এমন পরিচয় দিয়ে নয়া হয়রানির পথ খুঁজছেন। আদৌ কথিত মিলন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে থাকেন কী না এই তথ্যের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, সালাম কশাই তার ভূমি বাড়তি মূল্যে বিক্রি করতে কতটা ভয়ানক হতে পারেন, তা চোখে না দেখলে বলার অপেক্ষা থাকে না। মোল্লাবাড়ি এবং গ্যাস্টারবাইন নামক তাদের দুটি চলাচলের সড়ক থাকলেও শুধু ভূমি বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থ কামাতে মুক্তিযোদ্ধার বাসার অভ্যন্তর থেকে সড়ক নিতে চাইছে। এই চক্রান্তে সামিল আছেন, স্থানীয় শামীম, বাইজিদ, ইমরান হোসেন রকি, হাবিল খান, হাবিব, কবির আকন, সোহরাব, সাদ্দাম, বাবু এবং শাহীনসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি। আলোচ্চ্য শামীম একতো আওয়ামী লীগ নেতা এবং তিনি ব্যাংক ডাকাতিসহ বহুমুখী অপরাধে সম্পৃক্ত। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে দুটি মামলা করেছে বিএনপি। এরপর শামীম অন্তর্ধানে গেলেও সালাম কশাইদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই, বন্ধ হয়নি দক্ষিণ রূপাতলীর সেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি।

বলা চলে, অনেকটা বাধ্য হয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন বীরপত্নী। মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্ত্রানদের হয়রানি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধে সেনাবাহিনী এখন কি ভূমিকা রাখবেন, সেটাই দেখার বিষয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category