খান মেহেদী :- গর্বের বাকেরগঞ্জ বরিশাল জেলা শাখার পক্ষ থেকে আজ ৬ আগস্ট দুপুর ১ ঘটিকায় বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
গর্বের বাকেরগঞ্জ বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নাজিউর রহমানের নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদানে অনন্যের মধ্যে গর্বের বাকেরগঞ্জ কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম রহমান, বরিশাল জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিরা, সদস্য কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ফিরোজ আলম আকাশ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া, কার্যকরী সদস্য মোঃ সাব্বির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল জেলা সহ আশেপাশের অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা প্রাপ্তির প্রধান স্থান শেরে বাংলা হাসপাতাল। এই হাসপাতালটি দক্ষিণবঙ্গের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় অত্র হাসপাতালে আগত রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অত্র অঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নামক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শেরে বাংলা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বর্তমানে আশানুরূপ নয়। রোগীদের সাথে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের খারাপ ব্যবহার, প্রয়োজনীয় ঔষধপত্রের অভাব, প্যাথলজি ও রেডিওলজিতে পরীক্ষা নিরীক্ষার চরম অভাব ও রোগী জিম্মি, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফের অভাব, হাসপাতালের সর্বত্র দালাল সিন্ডিকেট ও অব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব, এম্বুলেন্সে রোগী পরিবহন ও ট্রলি বাণিজ্য, প্রয়োজনীয় লিফট ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার অভাব ইত্যাদি সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর ফলে রোগীদের ভোগান্তি চরম ভাবে বাড়ছে এবং হাসপাতালের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
শেরে বাংলা হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান নিশ্চিতের লক্ষে গর্বের বাকেরগঞ্জের পক্ষ থেকে ১০টি প্রস্তাব জানানো হয়েছে-
১। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য দক্ষ স্টাফদের সংকট সমাধানে দ্রুতই নতুন ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্টাফ নিয়োগ দিতে হবে এবং অবশ্যই নিয়োগ বাণিজ্য বা দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
২। হাসপাতাল থেকে রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৩। হাসপাতালের সকল ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে, দৈনিক সকাল-বিকাল সকল ওয়ার্ডে অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক দিয়ে রাউন্ড বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৪। রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে হাসপাতালের আইন শৃঙ্খলা উন্নত করতে হবে এবং হাসপাতালে প্রয়োজনীয় উন্নতমানের সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতাল থেকে সকল সিন্ডিকেট ও রোগী হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
৫। হাসপাতালের প্যাথলজি ও রেডিওলজি ২৪ ঘন্টা খোলা রেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা করতে হবে, হাসপাতালের কোনো রিপোর্ট হাতে লেখা চলবে না কম্পিউটার টাইপিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। প্যাথলজি ও রেডিওলজি পরীক্ষার লক্ষে রোগীদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে কোন রকমের অর্থ গ্রহণ করা যাবে না। এমআরআই, সিটি স্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও প্যাথলজি ল্যাবে উন্নত ও আধুনিক যন্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের নিয়মিত বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। অপারেশন থিয়েটার থেকে অপারেশন চলমান বা পরবর্তী খরচ চাওয়া বা মালামাল কিনতে হবে, না হয় আমরা ব্যবস্থা করে দিবো আমাদের টাকা দিয়েন। নিচ থেকে আনতে অনেক সময় লাগবে। হাসপাতালের স্টাফদের এসব সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে। রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় কিছু দরকার হলে, অবশ্যই চিকিৎসকের সিল সহ কাগজ রোগীর স্বজনদের দিতে হবে। গাইনি সহ সকল অপারেশন থিয়েটারের অনিয়ম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৮। হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বিশেষ করে হাসপাতালের সকল সিড়ি, টয়লেট ও হাসপাতাল এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে এবং প্রত্যেক ওয়ার্ডে রোগীদের কল্যাণে উন্নতমানের টয়লেট ও বেসিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। ইমারজেন্সি থেকে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে ফাস্ট লাইভ সেভিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০। হাসপাতালের অবকাঠামোর উন্নয়ন ও নিরাপদ ভবন নিশ্চিত করতে হবে।